জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গত এক দশকে বিভিন্ন নারী অধিকার গোষ্ঠী এবং সামাজিক আন্দোলনের সামাজিক উত্থান সত্ত্বেও, বিশ্বে লিঙ্গ সমতার অগ্রগতি খুব বেহি হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য দেখা গিয়েছে। ইউএনডিপির সমীক্ষা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, ৯০ শতাংশ পুরুষ ও মহিলা অথবা প্রতি ১০ জন নারী-পুরুষের প্রায় নয়জনেরই মনে নারীদের বিরুদ্ধে মৌলিক পক্ষপাত রয়েছে।
ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের ২০২৩ জেন্ডার সোশ্যাল নর্মস ইনডেক্স অনুযায়ী, নারীর প্রতি পক্ষপাতিত্বকে চারটি মূল মাত্রায় পরিমাপ করা যেতে পারে। সেগুলি হল রাজনৈতিক, শিক্ষাগত, অর্থনৈতিক এবং শারীরিক ইন্টিগ্রিটি।
রাজনৈতিক: গণতন্ত্রের জন্য নারীর পুরুষদের সমান অধিকার থাকা অপরিহার্য; পুরুষরা নারীদের তুলনায় ভালো রাজনৈতিক নেতা।
শিক্ষাগত: বিশ্ববিদ্যালয় মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: Khaleda Zia: লিভার সিরোসিস হৃদযন্ত্রের সমস্যা-সহ নানা জটিলতা নিয়ে ফের হাসপাতালে খালেদা জিয়া…
অর্থনৈতিক: নারীদের তুলনায় পুরুষদের চাকরিতে বেশি অধিকার থাকা উচিত; পুরুষরা মহিলাদের তুলনায় ভাল ব্যবসায়িক কাজ করে।
শারীরিক ইন্টিগ্রিটি: একজন পুরুষের জন্য তার স্ত্রীকে মারধর করা ন্যায়সঙ্গত; গর্ভপাত কখনই ন্যায়সঙ্গত নয়।
প্রতিবেদনে আরও জানা গিয়েছে, বিশ্বের ৬১ শতাংশ মানুষ রাজনৈতিক, ২৮ শতাংশ শিক্ষাগত, ৬০ শতাংশ অর্থনৈতিক এবং ৭৫ শতাংশ মানুষ নারীর শারীরিক ইন্টিগ্রিটির প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। ভারতে এই পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ।
সেখানে ৯৯ শতাংশ মানুষ মহিলাদের বিরুদ্ধে অন্ততপক্ষে একটি পক্ষপাত পোষণ করেন। ৬৯ শতাংশ ভারতীয় রাজনৈতিক, ৩৯ শতাংশ শিক্ষাগত, ৭৫ শতাংশ অর্থনৈতিক এবং ৯২ শতাংশ মানুষ মহিলাদের বিরুদ্ধে শারীরিক ইন্টিগ্রিটির বায়াস পোষণ করে।
আরও পড়ুন: Nuclear Weapons: অচিরেই পরমাণুযুদ্ধ? কেন চিন-সহ নানা দেশ গোপনে বাড়াচ্ছে নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেডস…
ইউএনডিপির তথ্য থেকে অনুমান করা যায় যে ভারতীয়রা মনে করে যে মহিলারা রাজনৈতিক নেতা হতে পারে, শিক্ষা অর্জন করতে পারে এবং ভাল উপার্জন করতে পারে, কিন্তু এরপরেও তাঁদের স্বামীদের অধিকার রয়েছে তাঁদেরকে মারার। এবং আরও লক্ষণীয় বিষয় হল যে মহিলাদের প্রতি এই ধরনের পক্ষপাতিত্ব পোষণকারী পুরুষ এবং মহিলাদের অনুপাত প্রায় সমান।
একটি পক্ষপাতদুষ্ট সমাজ শুধুমাত্র নারীর স্বাধীনতা ও পছন্দকে সীমিত করে তাই নয় পাশাপাশি সমাজকে নারী নেতৃত্বের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে। এটি দেখার ভঙ্গি, অভিজ্ঞতা, ক্ষমতা, কণ্ঠস্বর এবং ভাবনার বৈচিত্র্যও নষ্ট করে।