জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: লাদাখের পরিবেশ আন্দোলনকারী সোনম ওয়াংচুক ওরফে থ্রি ইডিয়টস সিনেমার ফুংসু ওয়াংড়কে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিস। আর তারই প্রতিবাদে বিক্ষোভ হরতালে স্তব্ধ লাদাখ। সোমবার রাতে দিল্লির সিংঘু সীমান্তে সোনম ওয়াংচুক ও তার ১২০ সঙ্গীকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিস। এদিকে ওই খবর ছড়িয়ে পড়তেই লেহ ও লাদাখে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। স্বতঃস্ফূর্তভাবে শুরু হয় যায় বন্ধ্। পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায় লাদাখ। বুধবারও বিক্ষোভ ও বন্ধে লাদাখের জনজীবন ব্যাহত।
আরও পড়ুন-চাই নিঃশর্ত তাঁবেদারি? দিল্লি পুলিসের হাতে গ্রেফতার আসল Rancho ফংসুক ওয়াংডু!
মঙ্গলবার সারা দিন ওয়াংচুক ও তাঁর সঙ্গীদের বাওয়ানা, নারেলা ও আলিপুর থানায় আটক রাখা হয়। তিন থানায় রাখা হয়েছে পুরুষ পদযাত্রীদের। নারীদের জন্য দিল্লি পুলিসের আইন অনুযায়ী আলাদা আয়োজন করেছে। ৩৬ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও পুলিস তাঁদের মুক্তি দেয়নি। এমনকি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আতিশীকেও বাওয়ানা থানা কর্তৃপক্ষ ওয়াংচুকের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্ট ওয়াংচুকদের আটকের বিরুদ্ধে করা আবেদন শুনবে।
লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দান, সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত করা ও লাদাখের পরিবেশ রক্ষার দাবিতে ওয়াংচুক আন্দোলন করছেন অনেক দিন থেকে। গোটা লাদাখ সেই আন্দোলনের সঙ্গী। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় তাঁরা রাজধানী লেহ থেকে দিল্লি পর্যন্ত পদযাত্রা শুরু করেন গত মাসের ১ তারিখ। গত সোমবার রাতে তাঁরা কয়েকটি বাসে চেপে দিল্লির সিংঘু সীমান্তে এলে হরিয়ানা ও দিল্লির পুলিশ তাঁদের আটকায়। পদযাত্রীদের তিনটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় আদিবাসী–অধ্যুষিত এলাকাগুলো হয় স্বশাসিত। সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষার সিদ্ধান্ত সেখানকার অধিবাসীরাই নিয়ে থাকেন। স্বশাসিত সেই এলাকার জমির অধিকারও থাকে তাঁদেরই। অসাম, মেঘালয়, মিজোরাম ও ত্রিপুরার এলাকা বিশেষ ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত। লাদাখ তার বিশেষ চরিত্রগত কারণে ওই তফসিলের আওতায় আসতে চায়। পদযাত্রীদের বক্তব্য, ওই মর্যাদা না পেলে খনিজ পদার্থে বোঝাই লাদাখ ক্রমেই বৃহৎ সংস্থার হাতে চলে যাবে যা মারাত্মক ক্ষতি করবে হিমালয়ের পরিবেশকে।
ওয়াংচুকের গ্রেফতার নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী আতিশীও মঙ্গলবার এক্সে লেখেন, উপরাজ্যপালের এই স্বৈরাচারী আচরণ ঠিক নয়। লাদাখের জনতা ওয়াংচুকের সঙ্গে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পাওয়ার লড়াই শুরু করেছেন। দিল্লির মানুষ তাঁদের সঙ্গে রয়েছে। লাদাখ ও দিল্লি দুই জায়গাতেই উপরাজ্যপালের শাসন শেষ হওয়া দরকার।
দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এক্সে লিখেছেন, কখনো কৃষকদের, কখনোবা লাদাখিদের দিল্লিতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দিল্লি কি কারও পৈত্রিক সম্পত্তি? অস্ত্রহীন শান্তিপ্রিয় মানুষদের কিসের এত ভয়?
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)