Newborn Death: কেঁদেও মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স, সদ্যোজাতের দেহ থলিতে মুড়ে ভিড় বাসে ৯০ কিমি শেষযাত্রায় হতভাগ্য বাবা!

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অমানবিকতা ভয়ংকর দৃশ্য! এই রকম কষ্ট যেন কোনও বাবা-মাকে ভুগতে না হয়। মৃত নবজাতককে প্যাকেটে করে বাড়ি নিয়ে আসেন বাবা। হৃদয়বিদারক এই ঘটনা শিউড়ে ওঠার মত। সখারাম কাভারে সেই ভাগ্যবত বাবা। ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ সেই মর্মান্তিক যাত্রার কথা বলতে গিয়ে গলা কেঁপে ওঠে তাঁর।

ঘটনাটি ঠিক কী?
সখারাম এবং তাঁর ২৬ বছরের স্ত্রী অভিতা দুই সন্তান নিয়ে থানে জেলার বাদলাপুরে একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। তৃতীয় সন্তানের অভিভাবক হতে চলেছিলেন তাঁরা। সন্তানের জন্মের সময় ঘনিয়ে এলে, নিরাপদ প্রসবের আশায় তারা তিন সপ্তাহ আগে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন।

আরও পড়ুন:Haryana Model Murder Case: বিবাহিত প্রেমিকই খুনি! শীতলের গলা কাটা দেহ ভেসে যেতেই…

কিন্তু ১১ জুন আচমকাই অভিতার প্রসব বেদনা শুরু হয়। সেখান থেকে শুরু হয় তাঁদের দুর্ভোগ। সখারাম বলেন, ‘সেদিন সকাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স ডেকেছি, কিন্তু কেউ আসেনি।’ তিনি জানান, গ্রামের আশা (ASHA) কর্মীও প্রথমে পাওয়া যায়নি। পরে তিনি জরুরি নম্বর ১০৮-এ ফোন করেছিলেন, কিন্তু প্রথমে কোনও উত্তর পাননি বলে জানা যায়। এরপর তিনি এক প্রাইভেট গাড়ির ব্যবস্থা করে স্ত্রীকে খোদালা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তাঁদের এক ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করানো হয়।

সখারাম আরও জানান, পরে তাঁদের মোখাদা গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্ত্রী অতিভা বলেন, ‘ওরা আমাকে একা একটা ঘরে আলাদা করে রাখে। আমার স্বামী এর প্রতিবাদ করলে, তারা পুলিস ডাকে—পুলিস এসে ওকে মারধর করে।’ মোখাদার চিকিত্‍সকেরা বাচ্চার হৃদস্পন্দন ধরতে না পারায় নাসিক সিভিল হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু তখন অ্যাম্বুলেন্স না থাকায়, ২৫ কিমি দূরের আসে গ্রাম থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনা হয়।

অভিতা নাসিকের হাসপাতালে পৌঁছান সন্ধ্যের সময়। ১২ জুন রাত ১.৩০-এ তিনি মৃত কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। দুঃখের পাহাড় এখানেই শেষ নয়। পরেরদিন সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুর মৃতদেহ সখারামের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু মৃতদেহ নিয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য কোনও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেয়নি।

আরও পড়ুন:Uttar Pradesh Crime: পুরনো প্রেমিকা, পরস্ত্রী মীরার প্রেমে মত্ত সঞ্জয়! ক্ষুব্ধ স্বামী এসে কোপাল…

সখারাম বলেন, ‘আমি এস.টি. স্ট্যান্ডে গিয়ে ২০ টাকায় একটা ক্যারি ব্যাগ কিনি, কাপড়ে আমার মেয়েকে জড়িয়ে রাখি, তারপর এমএসআরটিসি বাসে প্রায় ৯০ কিমি পেরিয়ে বাড়ি নিয়ে আসি।’ সেদিনই মৃত মেয়েকে পুঁতে শেষকৃত্য পূরণ করা হয়।

১৩ জুন সখারাম আবার নাসিকে গিয়ে স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসেন। স্ত্রীর শারিরীকভাবে দুর্বল থাকায় তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসার কথা ভাবেন। কিন্তু সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স দিতে অস্বীকার করে। বাধ্য হয়ে অভিতাকে নিয়ে বাসেই বাড়ি ফিরতে হয় সখারামকে।
 
অন্যদিকে, মোখাদা গ্রামীণ হাসপাতালের ডাক্তার ভাউসাহেব চাতার দাবি করেন, বাচ্চাটি গর্ভেই মারা যান। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স খারাপ থাকায় দেওয়া যায়নি। গ্রাম থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়। চিকিত্‍সক আরও দাবি করেন যে, হাসপাতাল ফেরার সময় অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সখারাম নাকি তা নিতে অস্বীকার করে একটি মুচলেকা দেন—যা সখারাম অস্বীকার করেছেন। হাসপাতালের পক্ষ থেকে আদিবাসী দম্পতিকে সবরকম সহযোগিতা করা হয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
  

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

Source link