রাজীব চক্রবর্তী: বাংলায় শেষ দফার ভোটের আগে বিজেপিকে নিশানা করল কংগ্রেস। সাংবাদিক সম্মেলন করে, পুস্তিকা প্রকাশ করে বিজেপিকে নিশানা করতে গিয়ে কংগ্রেসের গলায় শোনা গেল তৃণমূলের সুর। প্রশ্ন তোলা হয়েছে বাংলার একশো দিনের টাকা কেন আটকে রেখেছে মোদী সরকার, শ্লীলতাহানির অভিযোগের পরও কেন পদত্যাগ করছেন না রাজ্যপাল, শুভেন্দু অধিকারী-তাপস রায়ের ক্ষেত্রে কেন কাজ করছে ওয়াশিং মেশিন। বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ওইসব প্রশ্নের সঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। সেটি হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন পাওয়ার জন্যই কি এমন প্রশ্ন তুলছে হাত শিবির?
আরও পড়ুন-চোর সন্দেহে আশ্রমেই পিটিয়ে খুন নাবালক! গ্রেফতার মাতাজি…
তৃণমূল কংগ্রেসকে তুষ্ট করতেই পুস্তিকা প্রকাশ করে তৃণমূলের সুরে সুর মেলাল কংগ্রেস? এনিয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ওইসব প্রশ্নের মধ্য কোনও রাজনীতি নেই। একেবারেই স্বাভাবিক প্রশ্ন। পশ্চিমবঙ্গ ও দেশের বাস্তব যে পরিস্থিতি তাই তুলে ধরা হয়েছে পুস্তিকায়। তৃণমূল কংগ্রেস ইন্ডিয়া ব্লকের শরিক। ওই পুস্তিকায় লেখা রয়েছে ৭২ দিন ২৭২ প্রশ্ন, শূন্য জবাব। ভাগ মোদী ভাগ। তৃণমূলের তরফে ভাগ মোদী ভাগ প্রশ্ন তোলা হয় বারবারেই। তবে এবার তা তোলা হয়েছে কংগ্রেসের তরফে।
কী সেইসব প্রশ্ন? কংগ্রেস বলেছে, কেন দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের অবস্থা খারাপ, কেন এমজিআরএম প্রকল্পের টাকা আটকানো হয়েছে, কেন স্বাস্থ্য প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা হয়েছে, কেন দুর্নীতিগ্রস্থ বলার পরও তৃণমূল থেকে নেতা ভাঙিয়ে নেওয়া হচ্ছে, কেন শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে সিবিআই চুপ করে যায়? অর্থাত্ গ্রামে গঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেস যেসব কথা বলে থাকে সেই কথাগুলি কংগ্রেস পুস্তিকা প্রকাশ করে বলেছে। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, ভোটের ফলপ্রকাশের আগেই কি তৃণমূল কংগ্রসেকে ধরার চেষ্টা করছে কংগ্রেস?
কংগ্রসের ওই বক্তব্য নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, যেটা সত্য সেটা সবাইকে মানতেই হবে। ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স নিয়ে গিয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা দেয়নি , ১১ লাখ ৩৬ হাজার মানুষের আবাস যোজনার টাকা যে কেন্দ্র দেয়নি এটা তো সত্যি, এটা সবাই জানে। দুর্নীতিগ্রস্থ নেতাকে বিজেপিতে গেলে যে ধোলাই হয়ে যায় তাও তো দেখা যাচ্ছে। এটা সত্যি, এটাই তারা বলেছে। আমরা ইন্ডিয়া ব্লকে আছি। প্রদেশ কংগ্রেস বিজেপি তল্পিবাহক। অধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের সঙ্গে আমার নেই।
এদিকে, এনিয়ে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, কেউ যদি বাড়ির দরজাবন্ধ করে উদ্দাম নৃত্য করতে করতে ভাবে আমি মাধুরী দিক্ষীতের সঙ্গে উদ্দাম নৃত্য করছি, কেউ যাবে ব্যটাহাতে ব্য়াট ঘোরাতে ঘোরতে ভাবে উল্টোদিকে গ্লেন ম্যাকগ্রা বল করছে তাহলে এটা অনেকটা সেইরকম ব্যাপার। কংগ্রেস কার্যত একট সাইবোর্ড পার্টি পশ্চিমবঙ্গে। কংগ্রেসের অবস্থা কী তা মুর্শিদাবাদ ও মালদহে ভোট হয়ে যাওয়ার পরই বুঝিয়ে দিয়েছেন মল্লিকার্জুন খার্গে। অধীর চৌধুরীকে শাসন করেছেন। অধীর চৌধুরী রাজ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধাচারণ করছেন আর দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাতিষ্ঠানিক লুটকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সুতরাং এদের দিনে শেষ। কংগ্রেস কী বলছে তা নিয়ে মানুষ আর চিন্তিত নয়। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের বিসর্জন অবসম্ভাবী।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)