জি ২৪ ঘম্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নিউ টাউনের অভিজাত আবাসনে খুন হওয়া বাংলাদেশের এমপি আনওয়ারুল আজিমকে খুন করার পর তার ছবি দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শক্তিশালী চেতনানাশক দিয়ে আনোয়ারুল আজিমকে অচেন করে ফেলা হয়। পরে তা বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পার পরেই তারে পোশাক খুলে মৃতদের ছবি তুলে পাঠানো হয় ঝিনাইদহে আওয়ামি লিগের জেলা ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ ওরফে বাবুর ফোনে। এমনটাই বাংলাদেশ পুলিস সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন-মোদীর শপথে দিল্লি হাজির সকন্যা হাসিনা, চুটিয়ে খেলেন কচুরি-ধোকলা-পাপড়ি চাট
ঢাকা পুলিস সূত্রে খবর, ওই ছবি কামাল আহমেদ বাবুর ফোনে পাঠিয়েছিলেন শিমুল ভুঁইয়া। আনোয়ারুল খুনে একটা বড় ভূমিকা ছিল শিমুলের। সেকথা তিনি আদালতে স্বীকারও করেছেন। ছবিটি কেন কামালের কাছে পাঠানো হয়েছিল, এ বিষয়ে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এখানে দুটি বিষয় থাকতে পারে। প্রথমত, খুনিরা হয়তো চেয়েছিল আনোয়ারুল হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব হিসেবে উপস্থাপন করতে। দ্বিতীয়ত, ঝিনাইদহ-যশোর-খুলনা অঞ্চলে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা এই খুনের বিষয়ে অবগত থাকতে পারেন। এর কারণ হিসেবে ডিবি সূত্র বলছে, শিমুল ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কাজী কামালের বাইরেও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের আরও এক নেতার নাম জানা গিয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্য়ম সূত্রে খবর, নিউ টাউনের আবাসনে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার মাংসের টুকরোগুলো মানুষের বলে জানা গেছে। তবে সেটি এমপি আনারেরই কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। ডিএনএ পরীক্ষার পরেই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে জানা গিয়েছে, হত্যার পর টুকরো টুকরো করা হয় এমপি আনারের নিথর দেহ। এরপর মাংসের টুকরো ফেলা হয় ফ্ল্যাটেক কমোডের ভেতর এবং পার্শ্ববর্তী বাগজোলা খালে ফেলা হয় হাড়গুলো। গতকাল সেই হাড় উদ্ধার করে ফরেন্সিক তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
গত ১৩ মে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে খুন করা হয় বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনারকে। তদন্তকারীরা জানতে পারেন,খুনের পর শরীরের ছাল ছাড়িয়ে হাড় মাংস আলাদা করা হয়েছিল। তারপর মাংসের টুকরো কমোডে ফেলে ফ্ল্যাশ করে দেওয়া হয়। পরে ট্রলি ব্যাগ ভরে হাড়ের টুকরো বাগজোলা খালে এলে ফেলে দেয় কসাই জিহাদ ও সিয়াম। জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে লাগাতার তল্লাশি চালালেও এতদিনে কিছুই পাওয়া যায়নি। সাহায্য নেওয়া হয় নৌ সেনারও। শনিবার বনগাঁ সীমান্ত থেকে ধরা পড়ে সিয়াম হোসেন। খুনের পর নেপাল পালিয়ে গিয়েছিল সে। রবিবার সকালে তাকে সঙ্গে করে নিয়ে তল্লাশি চালানো হয় আর তাতেই উদ্ধার হয় হাড়। বাংলাদেশের বাসিন্দা সিয়াম ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার। মূল চক্রী আক্তারুজ্জামানের কাছে কাজ করত সে। তার যে রিসর্ট রয়েছে বাংলাদেশ সেগুলো দেখভালের দায়িত্ব ছিল সিয়ামের উপর । মাসিক ৫০ হাজার টাকা বেতন ছিল। সিয়ামই জিহাদকে মুম্বই থেকে কলকাতাতে নিয়ে এসেছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)