Bangladesh: ফের রোহিঙ্গা ‘স্রোত’? উত্তপ্ত বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে!

সেলিম রেজা, ঢাকা: মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান যুদ্ধে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এতে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের ২৭০ কিলোমিটার পুরোটাই এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তবর্তী নাফ নদীর মায়ানমারের অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আরাকান আর্মি। ওই নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশের নাফ নদীতে নৌ চলাচলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাড়ানো হয়েছে বিজিবির টহল।

বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জি ২৪ ঘন্টার বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে টেলিফোনে বলেন, যেহেতু সীমান্তের ওপার বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে নিয়েছে, সে কারণে আমরা সীমান্তে সতর্কতা বজায় রেখেছি যাতে কোনেও অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে। প্রায় আট মাসেরও বেশি সময় ধরে মায়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, মায়ানমারের চলমান এই যুদ্ধে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা সহযোগী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি-এআরএ ও আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসাসহ কয়েকটি সংগঠনের অবস্থান ছিল জান্তা বাহিনীর পক্ষে। এ কারণে সীমান্তবর্তী আরাকান রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার ফলে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার সিনিয়র সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিক জি ২৪ ঘন্টার বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে বলেন, এর ফলে বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টি আরও বেশি জটিল ও আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মংডুর পাশাপাশি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার বুথিডং ও পালেতাওয়া দখলের নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। যদিও রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কিছুই জানায়নি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। চলতি বছরের শুরু থেকেই বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে টানা যুদ্ধ চলছে। তীব্র যুদ্ধের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল মায়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকশ সদস্য। পরে তাদের মায়ানমারে ফেরতও পাঠানো হয়।

বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এহসান উদ্দিন বলেন, সীমান্তে অযাচিত যাতায়াত বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি আমরা। সেজন্য সচেতন করতে মাইকিংও করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাফ নদীতে মায়ানমার সীমান্তের ওপারে যেন কোনওক্রমেই কোনও নৌকা না যায় সেজন্য আমরা সতর্কতা জারি রেখেছি। কেউ যেন সীমানা পেরিয়ে এদিকে না আসে সেদিকে আমরা নজর রাখছি। এক্ষেত্রে ছোট ছোট নৌকাগুলোকে নাফ নদীতে বাংলাদেশ অংশে সর্তকতার সঙ্গে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলেও বড় ট্রলার, বড় জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলেও জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সীমান্তের নাফ নদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

নাফ নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং বাংলাদেশের জলসীমায় বিদ্যমান দ্বীপের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৌ টহলও জোরদার করা হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে আরাকান আর্মির হামলার মুখে কয়েকটি রোহিঙ্গা সংগঠনের নেতারা অস্ত্রসহ বাংলাদেশে আশ্রয়ের পর তাদের আটক করে বাংলাদেশের পুলিশ। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এমন অবস্থায় নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের এক ধরনের শঙ্কা রয়েছে।

আরও পড়ুন, Bangladesh:অশান্তির মাঝে ভারতকে বড় আশ্বাস দিল বাংলাদেশ!

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

Source link