জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজ্যের পাওনা আদায়ের দাবিতে যন্তরমন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে রয়েছেন তৃণমূলের অধিকাংশ নেতা। গতকাল ও আজকের তৃণমূলের কর্মসূচির মধ্যেই দিল্লিতে আজ দলের সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে করে তৃণমূল কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটকে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুন- দক্ষিণ দমদম-ঠাকুরপুকুরে ফের মৃত্যু, ডেঙ্গি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে!
এদিন শুভেন্দু বলেন-
আপনারা জানেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল দিল্লিতে আন্দোলন করছে। এই দল আগে জাতীয় দল ছিল। ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে ভোট হওয়ার পর এই দল জাতীয় দলের মর্যাদা হারিয়ে আঞ্চলিক দলে পরিণত হয়েছে। গত ১২ বছর ধরে এই দল কিছু মিথ্যের উপরে ভরসা করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কিছু কর্মসূচি দিল্লিতে করছে। এর প্রভাব খুব বেশি হবে না। গতকাল গিরিরাজ সিংও রাজ্যের দাবির আসল সত্য জানিয়ে দিয়েছেন।
রাজঘাটে বিনা অনুমতিতে গতকাল কর্মসূচি করা হয়েছে। গান্ধী জয়ন্তীর দিন গোটা দেশ থেকে মানুষ গান্ধীজিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। তাদের হেনস্থা হতে হয়েছে তৃণমূলের কর্মসূচির জন্য। এই দল গুন্ডাদের দল। এদের তিনটে এজেন্ডা হল, পরিবারবাদ, তুষ্টিকরণ ও দুর্নীতি। এরা উন্নয়নের কাজ করে না। প্রধানমন্ত্রী ফসল যোজনা বাংলায় নেই। ২০১৯ সালে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় সরকার তা বন্ধ করে দিয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত বাংলায় নেই। বাংলার যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তা বাংলার বাইরে চলে না। প্রতিটি বিষয়ে রাজনীতি করা ও দিল্লির মসনদের স্বপ্ন দেখাই তৃণমূলের অভ্যেস।
রাজ্যের বাইরে তৃণমূলের ভোট লড়া নিয়ে শুভেন্দু বলেন অধিকাংশ রাজ্যে ঘাড় মুচড়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ত্রিপুরায় তো নোটার থেকেও কম ভোট পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলায় বিজেপি-সহ অন্যন্যারা আন্দোলন করেছে, বিচার ব্যবস্থার চাপে তৃণমূল এখন কোণঠাসা। তাই লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের অবস্থা চাঙ্গা করতে দিল্লিতে এসে ওরা এসব করছে। এই ক্যামপেনের পুরোটাই মিথ্যে।
জবকার্ড নিয়ে রাজ্যের দুর্নীতির কথা বলেত গিয়ে শুভেন্দু বলেন, রাজ্যের দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক চিঠি লিখেছি। সঙ্গে ডক্যুমেন্টেও দিয়েছি। এক কোটিরও বেশি ভুয়ো জবকার্ড রয়েছে। এর ফলে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ওইসব রিপোর্ট দেখে কেন্দ্র ব্যবস্থা নিয়েছে। ইউপিএ আমলে তৃণমূল ১৪,৯৮৫ কোটি টাকা পেয়েছে। এনডিএর আমলে তৃণমূল সরকার পেয়েছে ৫৪,১৫০ কোটি টাকা। যে ১ কোটি জবকার্ড ডিলিট হয়েছে তা টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা বিশাল দুর্নীতি।
বাংলায় মনরেগাতে বিশাল দুর্নীতি হয়েছে। পঞ্চায়েত থেকে বিডিও পর্য়ন্ত ই দুর্নীতিতে জড়িত। জবকার্ড ইস্যুর মালিক পঞ্চায়েত প্রধান। প্রতিটি রাজ্যে কিছু আবাস যোজনা রয়েছে। বাংলায় ছিল গীতাঞ্জলী, বাংলার বাড়ি-এর মতো যোজনা। সেসব তুলে দিয়েছে। বাংলায় এখন ২ কোটি বেকার। কোনও শিল্প হয়নি গত ১২ বছরে। শিল্পবান্ধব পরিবেশও নেই। তার মধ্যে কিছু লোককে দিল্লিতে এনে, খাইয়েদাইয়ে মেলা চলছে। ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে মানুষকে ঘর বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলায় আবাস যোজনায় যে ১৭ দফা শর্ত রয়েছে তা ভেঙে পার্টি ক্যাডারদের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই এই দুর্নীতিপরায়ণ পরিবাবাদী এই দল যে ড্রামা করছে তা তাদের ভোট ব্যাঙ্ক রক্ষা করার জন্য। যেভাবে এরা ‘গটবন্ধন’ নয় ‘ঠগবন্ধন’ বানিয়েছে সেটা বাঁচানোর জন্যই এসব নাটক চলছে। এদের সঙ্গে জনতার কোনও সম্পর্ক নেই। এদের বিরুদ্ধে লড়াই রাস্তা, বিধানসভার পাশাপাশি আদালতেও লড়াই হবে। পিসি-ভাইপোর বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)