জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এতদিন বিশ্ব-উষ্ণায়নের নানা সংকটের কথা জানা যাচ্ছিল। গড় তাপমাত্রা বাড়ছে, বরফ গলছে, হিমবাহ গলছে, সমুদ্রে জলস্তর বাড়ছে। কিন্তু গাছের শারীরবৃত্তীয় কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে– এতটা বোধ হয় আশঙ্কা করা যায়নি! এবার সেটাই ঘটল। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জেরে উদ্ভিদরাজ্যের সালোকসংশ্লেষ কমতে শুরু করেছে। কমছে ক্রান্তীয় অরণ্য।
আরও পড়ুন: France: সরকারি স্কুলে বোরখা নিষিদ্ধ! অচিরেই চালু হতে চলেছে এই নিয়ম…
অরণ্যাঞ্চল বাতাস থেকে বিপুল পরিমাণ কার্বন-ডাইঅক্সাইড শুষে নেয়, ফিরিয়ে দেয় অক্সিজেন। আসলে গাছ তখন কার্বন ডাইঅক্সাইড, জল ও সূর্যালোক মিলিয়ে নিজের জন্য খাবার তৈরি করে। জীবনবিজ্ঞানের পাতায় উদ্ভিদের এই শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার কথা সকলেই পড়েন। একে বলা হয় ফোটোসিন্থেসিস বা সালোকসংশ্লেষ।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দীর্ঘ দিন ধরে অরণ্যাঞ্চল এই সালোকসংশ্লেষ যথাযথ করতে পারছে না। ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি, তাপমাত্রা এতই বাড়ছে যে, তা ক্রান্তীয় অরণ্যের পক্ষে ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তাপমাত্রা আরও বাড়লে এর পরে গাছেরা আর সালোকসংশ্লেষ করতেই পারবে না! আর সালোকসংশ্লেষ কমলেই এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাতাসে যে অক্সিজেন ফিরিয়ে দেয় গাছ, তা কমবে। ফলে বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়বে।
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক গ্রেগরি আর. গোল্ডস্মিথ বলেন, আমরা বহু আগে থেকেই জানি, গাছের পাতার তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট সীমায় পৌঁছলে সালোকসংশ্লেষ করার পদ্ধতি ভেঙে পড়ে। কিন্তু এই গবেষণায় প্রথম প্রমাণিত হল, ক্রান্তীয় অরণ্য বিপদসীমার খুব কাছে চলে এসেছে।
আরও পড়ুন: Panama Canal: জাহাজের ভিড়, জল নেই পানামায়! জলবায়ু পরিবর্তনের কালো ছায়া এবার সরাসরি বিশ্ববাণিজ্যে..
বিজ্ঞান এতদিন বলেছে, তাপমাত্রা ১১৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ালে গাছ তার সালোকসংশ্লেষ পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেয়। নতুন গবেষণায় এর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ক্রান্তীয় অরণ্যে তাপমাত্রা বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এবং এরকম চলতে থাকলে আরও বেশি করে গাছপালা তাদের সালোকসংশ্লেষের ক্ষমতা হারাবে। ক্রমে মরতে থাকবে গাছ। আর ক্রমশ অরণ্যশূন্য হতে থাকবে এই গ্রহ।