জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সংখ্যাতত্ত্বে ভারতের প্রাণপুরুষ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ। তাঁর পরেই এ দেশে যাঁকে এই শিরোপা দেওয়া যায় তিনি কালিয়ামপুডি রাধাকৃষ্ণ রাও, যাঁকে সি আর রাও বলেই সারা বিশ্ব চেনে, প্রয়াত হলেন ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণের প্রাক্-মুহূর্তে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর। আমেরিকার বাফেলোয় মারা গেলেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সংখ্যাতত্ত্বের নিত্যনতুন সূত্র এনে তিনি নিয়মিত সমৃদ্ধ করলেন সংখ্যাতত্ত্বের দুনিয়াকে। শুধু যে তত্ত্বের জন্ম দিলেন তাই-ই নয়, নিজের হাতে তৈরি করলেন বহু ছাত্রও।
আরও পড়ুন: Chandrayaan-3 Updates: সত্যিই ‘হাতে চাঁদ’ পেল ভারত! আগামী দিনগুলিতে মুন করিডরে কী করবে ‘প্রজ্ঞান’?
১৯২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির হাদাগালির এক তেলুগু পরিবারে জন্ম রাওয়ের। ১৭ বছর বয়সেই অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্কে স্নাতকোত্তর পড়তে যান। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংখ্যাতত্ত্বে স্নাতকোত্তর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংখ্যাতত্ত্বে এমএ-র প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন রাও। পরে এক বছরের প্রশিক্ষণ নিতে ১৯৪১ সালে রাও যোগ দেন কলকাতায় আইএসআইয়ে। এখানেই প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশের সান্নিধ্যলাভ। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত আইএসআইয়ের সচিব ও অধিকর্তার দায়িত্বেও ছিলেন।
সংখ্যাতত্ত্বকে নিয়ে বা সংখ্যাতত্ত্বকে পেরিয়ে তিনি কাজ করেছেন বহু ক্ষেত্রে। তাঁর বিখ্যাত কাজের মধ্যে রয়েছে এসটিমেশন থিয়োরি, ডিফারেনশিয়াল থিয়োরি, মাল্টিভ্যারিয়েট অ্যানালিসিস। জীবনে বহুতর সম্মানে ভূষিত হয়েছেন সি আর রাও। এ বছরেই পেয়েছেন ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন স্ট্যাটিসটিক্স’। ‘সংখ্যাতত্ত্বের নোবেল’ বলা হয় এই পুরস্কারকে। এ ছাড়াও পেয়েছেন পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, এস এস ভাটনগর পুরস্কার, রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটির স্বর্ণ ও রৌপ্যপদক।
আরও পড়ুন: Reply from Alien: ৪০ বছর পরে, আজই পৃথিবীতে এসে পৌঁছবে এলিয়েনদের সংকেত? উত্তেজনায় কাঁপছে বিশ্ব…
সারা বিশ্বে তাঁর খ্যাতি, সারা ভারতে তিনি সম্মানিত, কিন্তু কলকাতার সঙ্গে তাঁর বিশেষ সম্পর্ক। ভালোবাসার সম্পর্ক, স্মৃতিমেদুরতার সম্পর্ক। কেননা, তাঁর জীবনের প্রথম লগ্ন অতিবাহিত এই শহরেই। জীবনের চারটে দশকে তিনি যুক্ত কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট-এর সঙ্গে! এ ছাড়াও ছিলেন আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের সদস্য, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে।