৩৭ ঘণ্টা উড়ে ইরানের ৩ পরমাণু কেন্দ্রে হামলা! চর্চায় ১৬০০০০০০০০০ টাকার ‘আকাশের ভূত’…

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভয়ংকর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মেতেছে ইসরায়েল-ইরান (Iran-Israel War)। এই চরম আবহে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) আমেরিকার থেকে চেয়েছিলেন ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর ওরফে এমওপি। ট্রাম্পের দেশের কাছেই আছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বাংকার বাস্টার জিবিইউ-৫৭ (GBU-57)। নেতানিয়াহুর টার্গেট ছিল ইরানের ৩ পরমাণু কেন্দ্র- নাতাঞ্জ, ইসফাহান এবং ফোরদোতে হামলা চালানোর (Natanz, Esfahan, Fordow)। 

আমেরিকা আগেই চরম হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ইরানকে। এবার ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা। নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়ালেন ট্রাম্প। গত শনিবার রাত ২টো নাগাদ, মার্কিন হানায় কেঁপে গিয়েছে ইরান। ফোরদোতে আমেরিকা ৬টি বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলেছে। ইরানের নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে স্ট্রাইক করেছে ৩০টি টোমাহক ক্রুজ মিসাইল দিয়ে। ৩০টি মিসাইল ছোড়া হয়েছে সাবমেরিন থেকে। ভয়ংকর অস্ত্র এই বাংকার বাস্টার। আর বাংকার বাস্টার বহন করতে সক্ষম একমাত্র বি-টু স্পিরিট স্টেলথ বোমারু বিমান। আর এই বিমানই মিসৌরি থেকে প্রায় ৩৭ ঘন্টা অবিরাম উড়েছে। মাঝ আকাশে কয়েকবার জ্বালানিও ভরেছে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘ভীষণ সফল আক্রমণ’, লিখেছেন, ‘চলে গেল ফোরদো’!

আরও পড়ুন: ‘বেশি ট্যাঁ ফোঁ করলে পরের আক্রমণ কিন্তু আরও মারাত্মক হবে’! বিধ্বস্ত ইরানকে ভয়ংকর হুমকি ট্রাম্পের…তবে কি…

কী এই বাংকার বাস্টার বোমা?

বাংকার বাস্টার শব্দচয়ন করা হয়েছে নির্দিষ্ট কারণেই। এই বিশেষ বোমাগুলিকে ভূপৃষ্ঠের গভীরে গিয়ে বিস্ফোরণ করতে সক্ষম। আমেরিকার ক্ষেত্রে যা জিবিইউ-৫৭ এ/বি এমওপি। মার্কিন বিমান বাহিনীর মতে প্রায় ১৩,৬০০ কিলো ওজনের এই নির্ভুল-নির্দেশিত বোমা, ভূপৃষ্ঠের গভীরে অবস্থিত শক্ত বাংকার এবং টানেলগুলিতে আক্রমণের জন্য তৈরি। মনে করা হয় যে, মার্কিন বাংকার-বিধ্বংসী বোমা বিস্ফোরিত হওয়ার আগে ভূপৃষ্ঠের প্রায় ২০০ ফুট (৬১ মিটার) গভীরে প্রবেশ করতে পারে। বোমাগুলি পরপর নিক্ষেপ করা যেতে পারে, প্রতিটি বিস্ফোরণের সঙ্গেই তা কার্যকরভাবে ভূগর্ভস্থ স্থানের আরও গভীরে প্রবেশ করতে পারে। পাহাড়বেষ্টিত ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রটি ভূগর্ভের ৮০ থেকে ৩০০ ফুট গভীরে অবস্থিত বলে মনে করা হয়। কোন সাধারণ বোমা বা যুদ্ধাস্ত্র তাকে স্পর্শও করতে পারে না। বিমান হামলাতেও থাকে অটুট। একমাত্র ভরসা-বাংকার বাস্টার

কেন বি-টু স্পিরিটই প্রয়োজন হল?

জিবিইউ-৫৭ এ/বি এমওপি বাংকার বাস্টার বোমা একমাত্র আমেরিকার বি-টু স্পিরিটই ফেলতে পারে। কারণ একমাত্র এই বিমানই সেই কাজের উপযুক্ত কনফিগারেশন আছে। এবং সেভাবেই প্রোগ্রামড। ওদিকে আবার বি-টু স্পিরিট একমাত্র মার্কিন বায়ুসেনাই ওডা়তে পারে! এই বিমানটি ১৮০০০ কিলোর পেলোড বহন করতে পারে। মার্কিন বায়ুসোন বলেছে, যে তারা দু’টি বাঙ্কার-বাস্টার বোমা বহন করার জন্য বি-টু স্পিরিটের সফল পরীক্ষা করেছে। যার মোট ওজন প্রায় ২৭,২০০ কেজি। কিলো কিলো বোমা নিয়ে তাই বি-টু স্পিরিটই উড়েছে

কী এই বি-টু স্পিরিট?

আমেরিকার নর্থরোপ গ্রুমম্যানের তৈরি বি-২ স্পিরিট স্টিলথ বোমারু বিমান। এটির ফ্লাইং উইং ডিজাইন এবং রাডার ফাঁকি দেওয়ার প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য পরিচিত। এই বিমান প্রচলিত এবং পারমাণবিক উভয় ধরনের অস্ত্র বহন করতে সক্ষম। এটি মূলত একটি ভারী কৌশলগত বোমারু বিমান যা দূরপাল্লার মিশনে ব্যবহৃত হয়। মাঝ আকাশে বি-টু স্পিরিট একবার মাত্র জ্বালানি ভরে ১০ হাজার নটিক্যাল মাইল উড়তে পারে। সমতলে যা প্রায় ১৯ হাজার কিলোমিটারের সমান। ঘণ্টায় ১০০০ কিমি গতিতে, দূরপাল্লার ভারী বোমারু বিমান কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিশ্বের যে কোনও জায়গায় পৌঁছতে পারে। কেজি কেজি বোমা ছুড়তে পারে বি-টু স্পিরিট  

বি-টু স্পিরিট

বিচিত্রদর্শন বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর ও বিধ্বংসী বিমান বললেই সবার আগে নাম আসে বি-টু স্পিরিটের। সবচেয়ে দামি জেটও বি-টু স্পিরিট। একটি বি-টু স্পিরিটের দাম ১৬ হাজার কোটি টাকা। আমেরিকার অস্ত্রাগারে ২০টি রয়েছে। এই বিমান আমেরিকা কাউকে বিক্রিও করে না। আর বি-টু স্পিরিট আমেরিকা বাদে বিশ্বের কোনও দেশের কাছে নেই। বি-টু স্পিরিটকে ‘ঘোস্ট অফ দ্য স্কাই’ অর্থাত্‍ ‘আকাশের ভূত’নামেও ডাকা হয়। এখন দেখার ট্রাম্প নেতানিয়াহুর দেশে বি-টু স্পিরিট পাঠান কিনা!  

আরও পড়ুন: ভয়ংকর মারণাস্ত্র ‘বাংকার বাস্টার’ দিয়েই শেষমেশ ইরান আক্রমণ ট্রাম্পের! মাটির ২০০ ফুট গভীরে ঢুকে ১৩৬০০ কিলো ওজনের বিধ্বংসী এই মার্কিন অস্ত্র…

 

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 

 

Source link