সেলিম রেজা, ঢাকা: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে চারটি সংস্কার কমিশন। এসব কমিশনের দেওয়া কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংস্কারে সম্মতি থাকলেও কিছু প্রস্তাব নিয়ে ঘোরতর আপত্তি রয়েছে বিএনপির। বিশেষ করে সংবিধানের মূলনীতিতে পরিবর্তনের যেসব সুপারিশ এসেছে, তা নিয়ে দ্বিমত আছে। তবে এ নিয়ে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাচ্ছে না দলটি।
আরও পড়ুন-কিশোরীকে নিজের টোটোয় চাপিয়ে নির্জনে নিয়ে গিয়ে ‘ধর্ষণ’! খবর পেয়েই ছুটল পুলিস…
গত বুধবার সংবিধান, নির্বাচন, পুলিস এবং দুদকের সংস্কারের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর প্রধানেরা। সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবে বাংলাদেশের নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’-এর পরিবর্তে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ রাখার সুপারিশ করেছে। সেই সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে সংবিধানের মূলনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে কমিশন। মূলত বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার কমিশনের এ প্রস্তাবগুলো নিয়ে ঘোর আপত্তি রয়েছে বিএনপির।
বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জি ২৪ ঘন্টার বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন-সংক্রান্ত সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির আপত্তি নেই বললেই চলে। তবে বাংলাদেশের সংবিধানের ৪ মূলনীতি সংস্কারের প্রস্তাবে ঘোর আপত্তি আছে দলের। জাতীয়তাবাদ বাদ দিয়ে বহুত্ববাদের প্রস্তাব কোনোভাবেই মানবে না বিএনপি। একই সঙ্গে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরিবর্তে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার প্রস্তাবও ভালোভাবে নেয়নি দল। এসব কারণে গত বৃহস্পতিবার জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে যেতে চায়নি বিএনপি। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় শেষমেশ একজন প্রতিনিধিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে, সংস্কার কিংবা ঘোষণাপত্র যা-ই হোক না কেন, নির্বাচনের দাবিতে আগের অবস্থানেই আছে বিএনপি। সংস্কারের কারণে নির্বাচন বিলম্বিত করারও কোনো কারণ দেখছেন না দলটির নেতারা।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞ যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। কারণ, সংবিধানের ব্যাপারেও বহু কথা আছে, যেগুলো আমাদের দেখতে হবে।’
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)