জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কমতে থাকা জন্মহারকে এদেশে নানা ভাবে মেরামত করার চেষ্টা করা হয়েছে বারবার। অধিকাংশ সময়েই সরকারের তরফেই চেষ্টাগুলি করা হয়েছে। এবার সেই খাতায় নাম লেখাল অসরকারি সংস্থা। সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করতে চিনের একটি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের জন্য ১৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার বোনাস দিচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির অন্যতম চিনের এই ট্রিপ ডটকম। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ৩২ হাজার কর্মীকে সন্তান জন্মদানে উৎসাহ দিতে ‘চাইল্ড কেয়ার সাবসিডিজ’ নামে এক বোনাস ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: The Netherlands: ১৬০ বছর আগেকার ঘটনার সূত্রে ক্ষমা চাইলেন ডাচ রাজা…
প্রতিষ্ঠানটিতে অন্তত তিন বছর ধরে চাকরি করা কর্মীরা প্রতিবছর প্রতিটি নবজাতকের জন্য ১৩৭৬ মার্কিন ডলার করে বোনাস পাবেন। সন্তানেরা তাদের প্রথম জন্মদিন থেকে পাঁচ বছর বয়সে না পৌঁছনো পর্যন্ত এই বোনাস পাবেন সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। গতকাল শনিবার থেকেই এই নীতি কার্যকর হয়েছে।
ট্রিপ ডটকমের চেয়ারম্যান জেমস লিয়াং বলেছেন, নতুন এই চাইল্ড কেয়ার বেনিফিট প্রবর্তনের মাধ্যমে তাঁরা কর্মীদের আর্থিক সহায়তা দেব। এতে কর্মীরা তাঁদের পেশাগত কাজকর্মের সঙ্গে আপস না করেই পরিবার শুরু করা বা পরিবার বড় করার কাজে উৎসাহিত হবেন।
রাষ্ট্রসংঘের তথ্য অনুযায়ী, চিন বর্তমানে জনসংখ্যা-সংকটের মুখোমুখি। গত বছর চিনের জনসংখ্যা গত ৬০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো কমে গিয়েছিল। এই সময়ে প্রতি ১০০০ জনে মাত্র ৬.৭৭ জন সন্তান জন্ম দিয়ছেন সেখানে, যা ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট চিন প্রতিষ্ঠার পর থেকে সর্বনিম্ন।
২০১৫ সালে চিন তার কয়েক দশক ধরে চলা এক সন্তান নীতি বাতিল করে প্রাথমিকভাবে বিবাহিত দম্পতিদের দুই সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু ২০১৬ সালে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি হওয়ার পর দেশটির জাতীয় জন্মহার হ্রাস অব্যাহত। বিষয়টি নীতিনির্ধারকদের জন্যও উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রিপ ডটকমের তরফে জেমস লিয়াং বলেন, আমি সব সময় পরামর্শ দিয়েছি, সরকার শিশু-সহ পরিবারগুলিকে অর্থ দিক। শিশুপালনের খরচ কমাতে এবং তরুণদের একাধিক সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা পূরণ করতেও সহায়তা করুক সরকার।
চিনে জন্মহার কমে যাওয়াই অবশ্য একমাত্র উদ্বেগের বিষয় নয়। দেশটিতে এখন বিয়ের হারও কমে গিয়েছে। যা এই সমস্যাকে আগামী দিনে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আরও পড়ুন: Singapore: ৪৭৬! গত ২০ বছরে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার খবরে শিউরে উঠছে দেশ…
২০২১ সালে সন্তান জন্মের সীমা শিথিল করে তিন সন্তান জন্মের অনুমতি দিয়েছিল চিন সরকার। এ ছাড়া বেশি সন্তান নিয়ে বড় পরিবার গড়ে তুলতে তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করার উদ্যোগও নিয়েছে তারা। এর মধ্যে আছে মাতৃত্বকালীন ছুটি দিতে পরিকল্পনা প্রণয়ন, পরিবারগুলির ট্যাক্স কমানো ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান। তবে নানা কারণেই এসব উদ্যোগ তেমন সুফল বয়ে আনতে পারেনি বলেই ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।