জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কুচকুচে কালো, কদর্য চেহারা, কর্কশ কণ্ঠস্বর! হলে কী হবে, দারুণ বুদ্ধি, যথেষ্ট স্মার্ট এরা। পাখির বিষয়ে কথা হচ্ছে। কাক। কাকেদের এক ধরনের নাম্বার-সেন্স বা সংখ্যা-বোধ আছে। তারা এক, দুই,তিন, চার পর্যন্ত বুঝতে পারে। এরপরের সংখ্যা তাদের পক্ষে বেশি হয়ে যায় এবং তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। হাসছেন? না কি, অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন গল্পকথা!
আরও পড়ুন: Jalpaiguri: ঝড়ে ফের বিধ্বস্ত গোটা এলাকা! গাছ পড়ে গিয়েছে, বিদ্যুৎহীন বহু জায়গা, শেষ নেই ক্ষতির…
তা এরকম গল্প ছিল বইকি! ‘হ য ব র ল’ সুকুমার রায়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক সৃষ্টি। ‘হ য ব র ল’ বাংলা সাহিত্যের ননসেন্স ধারারও এক শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। এই ‘হ য ব র ল’-তেই রয়েছে ‘শ্রীকাকেশ্বর কুচকুচে’ নামের এক দাঁড়কাক। ৪১ নম্বর গেছোবাজার, কাগেয়াপট্টির বাসিন্দা এই দাঁড়কাকটি। সে বিদঘুটে রকমের হিসাবপত্র করতে পারে। এ নিয়ে রচনাটিতে বিস্তর মজা আছে। তবে, কাকের এই গুনতে পারাটা যে মোটেই সাহিত্যিকের কল্পনা নয়, সেটাই প্রমাণিত হল নতুন গবেষণা থেকে।
এই গবেষণা করেছেন জার্মানির টুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিম্যাল ফিজিওলজি ল্যাবের একদল গবেষক। তাঁরা বলেছেন, মানুষ ও কাক উভয়ই শিশুকালে গণনা করতে এবং দ্রুত চারপাশের বস্তু শনাক্ত করতে শিখে যায়। বলা যায়, কাকের একধরনের নাম্বার-সেন্স বা সংখ্যা-বোধও আছে। তারা এক, দুই, তিন, চার পর্যন্ত বুঝতে পারে। এরপর যা-ই আসুক তা তাদের পক্ষে একটু কঠিন হয়ে যায় এবং তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। ম্যাসাচুসেটসের উইলিয়ামস কলেজের জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক ও প্রাণীবিশেষজ্ঞ বলেছেন, কাকেরা যথেষ্ট স্মার্ট।
গবেষকদলের প্রধান এবং টুবিঙ্গেন ল্যাবের গবেষক ডায়ানা লিয়াও বলেন, শিশুদের গণনা শেখার পদ্ধতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে। সদ্য গুনতে শেখার পর বাচ্চারা তাদের সামনে থাকা যে কোনও বস্তুই গণনা করতে শুরু করে দেয়। তাদের সামনে যদি কয়েকটি খেলনা থাকে তাহলে তারা ‘এক, দুই, তিন’ বা ‘এক এক এক’ এভাবে গণনা করে। লিয়াও এবং তাঁর সহকর্মীরা ১৬০টিরও বেশি সেশনে আমেরিকান কাকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত এক ইউরোপীয় প্রজাতির তিনটি ক্যারিয়ন কাককে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। তারই ফলশ্রুতি স্বরূপ এগুলি প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: Israel Offered Hamas a Cease-fire: ইজরায়েলের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ইতিবাচকই ভাবছে হামাস, জো-র ভাবনাকে স্বাগত বিশ্বনেতাদের…
তবে, এটা প্রাণিজগতে শুধু কাকই গণনা করতে পারে তা কিন্তু নয়, গুনতে পারে শিম্পাঞ্জি, ব্যাঙ, পিঁপড়েও। মানুষের মতো শিম্পাঞ্জিরাও তাদের শিশুদের ক্রমানুসারে গণনা করতে এবং সংখ্যার মান বোঝাতে শেখায়। সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে কিছু পুরুষ ব্যাঙ তার প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যাঙটি কতবার ডাকছে তা গুণে রাখে, তারপর যখন তার পালা আসে সে তার প্রতিদ্বন্দ্বীর সমান বা তারচেয়ে একবার বেশি ডেকে নারী ব্যাঙটিকে মুগ্ধ করতে চায়। আবার পিঁপড়েরা কত পা হাঁটছে তা গুনে গুনে ফের তাদের বাসস্থানে ফেরে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)