শুরু করেছিলেন নীতীশ, এবার কংগ্রেসশাসিত রাজ্যগুলিতেও জাতিভিত্তিক জনগণনা, ঘোষণা রাহুলের

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জাতিভিত্তিক জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশ করে হইচই ফেলে দিয়েছেন নীতীশ কুমার। এনিয়ে খোদ সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এবার বড় ঘোষণা করলেন রাহুল গান্ধী। ওয়েনাড়ের সাংসদের ঘোষণা, কংগ্রেস শাসিত সব রাজ্যে এবার জাতিভিত্তিক জনগণনা হবে। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। রাজস্থানে ইতিমধ্যেই এনিয়ে তত্পরতা শুরু হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন-বদলে দেবে ভোটের অঙ্ক! বিহারে প্রকাশিত জাতিভিত্তিক জনগণনার রিপোর্ট

কয়েকদিন আগেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট রাজ্য জাতিভিত্তিক জনগণনার পক্ষে সওয়াল করেছেন। পাশাপাশি সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ে গিয়ে একই কথা বলেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেছেন, রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ছত্তীসগঢ়েও জাতিভিত্তিক জনগণনা হবে। প্রসঙ্গত, নীতীশ কুমারের জাতিভিত্তিক জনগণনার পর অন্যান্য রাজ্যেও এনিয়ে দাবি উঠছে। কিন্তু তেলঙ্গানায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তোপ, জাতপাত ভিত্তিক জনগণনা করে দেশকে ভাঙার চেষ্টা করছে বিরোধীরা।

এদিকে, রাহুল গান্ধীর কথা মতো এবার জাতিভিত্তিক জনগণনা হবে রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, হিমাচল প্রদেশ ও কর্ণাটকেও। এখানেই থেমে থাকেননি রাহুল। তিনি আরও বলেছেন, জাতিভিত্তিক জনগণনার পর এবার কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে আর্থিক অবস্থার মানদণ্ডে জনগণনা হবে।  জানার চেষ্টা হবে সমাজের কোন অংশের পাশে দাঁড়ানো এখনই প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, গোটা দেশেই জাতিভিত্তিক জনগণনার প্রয়োজন। কারণ দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর হাতেই বেশি ক্ষমতা থাকা উচিত।

জাতিভিত্তিক জনগণনা নিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নেই জাতিভিত্তিক জনগণনা করার। কংগ্রেসের ৪ মুখ্যমন্ত্রীর মধ্য়ে ৩ জনই ওবিসি। অন্যদিকে, দেশের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির ১০ জন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে একজন ওবিসি। প্রধানমন্ত্রী ওবিসিদের জন্য কিছুই করেন না। বরং তাদের মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এমন জনগণনা কি সমর্থন করবে ইন্ডিয়া জোট? এনিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা এতে রাজিই হবেন। এই ধরনের জনগণনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বরং জাতিভিত্তিক জনগণনার সঙ্গে সামাজিক ন্যায়ের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর রাজ্যের জাতিভিত্তিক জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নীতিশ কুমার সরকার। সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, বিহারের ১৩ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে তপসিলি জাতির মানুষ রয়েছেন ১৯.৭ শতাংশ মানুষ। এছাড়াও তপসিলি উপজাতিভূক্ত মানুষ রাজ্যের ১.৭ শতাংশ। রাজ্যে জেনালের ক্যাটিগোরির মানুষ মাত্র ১৬ শতাংশ। রাজ্যে ভূমিহারের হার ২.৮৬ শতাংশ, ব্রাহ্মণ ৩.৬৬ শতাংশ, মুখ্যমন্ত্রী জাতি কুড়মিরা রয়েছেন ২.৮৭ শতাংশ।  নীতীশ কুমারের রাজ্যে অতি পিছিয়েপড়া শ্রেণির মধ্যে পড়েছেন ৩৬ শতাংশ মানুষ, পিছিয়েপড়া শ্রেণির মধ্যে রয়েছেন ২৭.১ শতাংশ। সবেমিলিয়ে রাজ্যে পিছিয়েপড়া মানুষ রয়েছে ৬৩.১ শতাংশ।

লালুপ্রসাদ যাদবের যাদব সম্প্রদায়ের মানুষ রায়ছেন ১৪.২৭ শতাংশ। যাদবরা সবাই ওবিসি ক্যাটিগোরিতে পড়েছেন। ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, বিহারের এই জাতিভিত্তিক রিপোর্ট বহু রাজনৈতিক ইস্যুর জন্ম দেবে। আপাতত বিহারের ওবিসিদের জন্য ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এবার সেই সংরক্ষণের সীমা বাড়ানোর দাবি উঠতে পারে। রাজ্যের তিনভাগের ২ ভাগ মানুষই যেখানে ওবিসি শ্রেণিভূক্ত সেখানে রাজ্যনৈতিক জনপ্রতিনিধিত্বেও জাতপাত ভিত্তিক কোটার দাবি উঠতে পারে।

জাতিভিত্তিক জনগণনার রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সংবাদমাধ্যমে বলেন, গান্ধী জয়ন্তীতে জাতিভিত্তিক জনগণনার রিপোর্ট সামনে এসে গেল। খুব শীঘ্রই রাজ্যের ৯টি দলকে বৈঠকে ডাকা হবে। জাতিভিত্তিক জনগণনার রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হবে।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল) 

Source link