জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পুলিসের দাবি আত্মহত্যা। স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য ঘরে ঢুকে পুলিস যখন তল্লাশি চালাচ্ছিল সেই সময়েই মেরে ফেলা হয়েছে ওই তরুণীকে। এনিয়ে পুলিসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন এলাকার মানুষজন। ভাঙচুর হল পুলিসের গাড়ি, দেওয়া হল গাড়িতে আগুন। কয়েকজন পুলিসকর্মীকে একটি ঘরে আটকেও রাখেন স্থানীয়রা। তাদের ছাড়াতে এসেই পুলিসের সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষ হয় এলাকার লোকজনের। সোমবার মধ্যরাতে এনিয়ে তোলপাড় ঢাকার পল্লবীর আদর্শনগর।
আরও পড়ুন-প্রাথমিকে নিয়োগে স্বজনপোষণ! শিক্ষা দফতরকে মোটা টাকা জরিমানা হাইকোর্টের
কেন অভিযান? সোমবার ঢাকা পুলিস লাভলি বেগম নামে একজনের বাড়িতে হানা দেয়। খবর ছিল লাভলি ও তার মেয়ে বৈশাখী ইয়াবা-সহ অন্যান্য মাদকের ব্যবসা করে। তাদের বাড়ি থেকে যেসব মাদক উদ্ধার হয়েছে তা সংবামাধ্যমের সামনে হাজিরও করেছে পুলিস। ১৯ বছরের বৈশাখীর বিরুদ্ধে ৪টি ও তার মা লাভলির বিরুদ্ধে ৭টি মাদক পাচারের মামলা রয়েছে বলে দাবি পুলিসের। স্থানীয়দের একাংশের অবশ্য় দাবি, বৈশাখীদের বাড়িতে পুলিসের সোর্সদের আনাগোনা ছিল। পুলিসের ছত্রছায়াতেই মাদক বিক্রি করতো মা-মেয়ে।
লাভলিকে গ্রেফতার করতে সোমবার রাতে আদর্শনগরে তার বাড়িতে আসে পুলিস। গেটে ধাক্কা দেওয়ার পরও প্রথমে দরজা খোলেনি লাভলি ও বৈশাখী। পরে দরজা ভাঙার কথা শুনে গেট খুলে দেওয়া হয়। পরিবারের দাবি, লাভলি, বৈশাখী ও তার বোনরা ছিল বাড়ির চারতলায়। দরজা ধাক্কা দেওয়ার শব্দ শুনে সে নীচে নেমে আসে। শেষপর্যন্ত গেট খুলে দেন লাভলির মা। তার পরই পুলিস ঘরে ঢুকে সোজা চারতলায় চলে যায়। লাভলিকে ধরে বেধড়ক মারধর করে পুলিস। সেই মারে বাধা দিতে এলে বৈশাখীকে একটি ঘরে আটকে রাখে পুলিস। এরপর লাভলিকে নিয়ে চলে যায় পুলিস। তবে মিরপুর পুলিসের দাবি, তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি থেকে সে পালিয়ে গিয়েছে।
এদিকে বৈশাখীর ভাই আতাউরের দাবি, পল্লবী থানার এসআই জহিরের প্ররোচনাতেই আত্মঘাতী হয়েছে বৈশাখী। লাভলিকে গ্রেফতারি আটকাতে বৈশাখীদের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা দবি করা হয়। কিন্তু বৈশাখীরা ৫০ হাজার টাকা দিতে রাজী হন। কিন্তু শেষপর্যন্ত লাভলিকে নিয়ে চলে যায় পুলিস। তখন বৈশাখীকে একটি ঘরে বন্ধ করে যায়। শুধু তাই নয় আত্মহত্যা করার জন্য বৈশাখীর দিকে একটি ওড়না ছুড়ে দেন। এদিকে, পুলিসের মিরপুর বিভাগের উপ কমিশনার জসিমউদ্দিন মোল্লা জানিয়েছেন, লাভলিকে ধরে আনার সময় পুলিসকে বাধা দেয় তার মেয়ে বৈশাখী। এঁটে না ওঠায় একটি ঘরে ঢুকে আত্মহত্যার হুমকি দিতে থাকে। পুলিসের সঙ্গে এই গোলমালের সময়ে আত্মহত্যার অভিনয় করতে গিয়েই মৃত্যু হয় বৈশাখীর।
অন্যদিকে, পাড়ায় রটে যায় বৈশাখীকে গলা টিপে মেরে ফেলেছে। এরপরই পুলিসের উপরে হামলা চালায় স্থানীয়রা। লাভলির ঘরের এক নাবালক সদস্য সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে, পুলিস বলছিল আজ মাদক পেলেও লাভলিকে ধরব। না পেলেও ধরব। ওদের সঙ্গে এসেছিল ফর্মা ওহিদ। ও-ই মাদক নিয়ে এসেছিল।