জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্য়ুরো: পশ্চিমবঙ্গে ধীরে ধীরে বাড়ছে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা। পরিস্থিতি বুঝে প্লেটলেটের ঘাটতি সামাল দিতে নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। গতবছর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। মৃত্যু হয়েছিল ৩০ জনের। স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা গতবারের থেকে এবার আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। এদিকে, পড়শি বাংলাদেশে আশঙ্কাকে ছাপিয়ে গিয়েছে বাস্তাব পরিস্থিতি। ইতিমধ্যেই সেখানে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে ১৭৬ জনের। ২০১৯ সালে ব্যাপক আকার ধারন করেছিল ডেঙ্গি। সেবার মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের। এবার বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা হয়তো মহামারির দিকে যাচ্ছে ডেঙ্গি।
আরও পড়ুন-ডেঙ্গি আক্রান্তকে কখন দিতে হবে প্লেটলেট? গাইডলাইন জারি স্বাস্থ্যভবনের
২০১৯ সালে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন মানুষ। হাসপাতালে যাননি এমন রোগীর সংখ্য়া ছিল কয়েক লাখ। কোনও কোনও মহল থেকে অনুমান করা হচ্ছে রোগীর সংখ্য়া ৮ লাখ হতে পারে। এবছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার মানুষ। শুধুমাত্র জুলাই মাসেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২২৯ জন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বর্তমানে ডেঙ্গি সংক্রমণ সর্বোচ্চ সীমায় রয়েছে। এরপর তা ধীরে ধীরে কমবে। কিন্তু এই অবস্থা জারি থাকতে পারে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পরস্থিতি যে মহামারীর আকার নিতে পারে বলে সংবাদামাধ্যমে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র ডা রোবেদ আমিন।
যেভাবে ডেঙ্গির রোগীর সংখ্যা বড়তে পারে বলে মনে করছে তাতে দেশের হাসপাতালগুলিতে কীভাবে রোগীদের জায়গা দেওয়া হবে তা নিয়ে চিন্তিত সরকার। ঢাকার একটি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা পাঁচশোর বেশি। সেখানে ভর্তি রয়েছেন ছশোরও বেশি রোগী। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে জুন মাসে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮৯০। জুলাই মাসে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩১১৬। চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মী বাড়ানোর পরও পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পাচ্ছে হাসপাতালগুলি।
জাতীয় জনস্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক ডা মোশতাক হোসেনের দাবি, ২০২২ সালে ডেঙ্গি ছড়িয়েছিল। তা কমেও গিয়েছিল। কিন্তু তা শেষ হয়ে যায়নি। সেটাই এই বছর দ্বিতীয় ঢেউ হিসেবে ফিরে এসেছে। তবে পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক।
এদিকে, বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশে তার চরিত্র বদল করছে ডেঙ্গি। এটাই এখন চিকিত্সক ও বিশেষজ্ঞদের চিন্তার কারণ। ফলে রোগ নির্ণয় ও চিকিত্সায় দেরি হয়ে যাচ্ছে। করোনর ক্ষেত্রেও এমনটি দেখা গিয়েছিল। এখন রোগীর সংখ্যা বাড়লে কীভাবে সামাল দেওয়া হবে? স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, রোগীদের ভর্তির ক্ষেত্রে মেনে চলা হবে ‘গেটকিপিং’ পদ্ধতি। অর্থাত্ কোন রোগীকে এখনই ভর্তি করতে হবে তা ঠিক করে তাকেই আগে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে।