জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জি২০-র এক-একটি সিদ্ধান্ত এক-একটি রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে বিশেষ বার্তা। যেমন, নতুন অর্থনৈতিক করিডরের সিদ্ধান্ত চিনের কাছে পৌঁছে দিল অন্য রকম বার্তা। চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড কি এবার অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে? মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে দিয়ে নতুন বাণিজ্যপথ তৈরি করে ভারত কি আন্তর্জাতিক ব্যবসাবাণিজ্যে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে চলেছে?
আরও পড়ুন: G20 Summit: পরবর্তী সম্মেলন কোথায়? কার হাতে জি২০-র সভাপতিত্ব তুলে দিলেন মোদী?
প্রাচীনকালে ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে ইউরোপের যোগসূত্র স্থাপন করত ‘স্পাইস রুট’। নতুন যে প্রকল্প আসছে তাকে তাই ‘নিউ স্পাইস রুট’ বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। জি২০-তে এবার ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপের আর্থিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘নিউ স্পাইস রুট’ তথা করিডর তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হল। মোট দুটি করিডর মিলে প্রকল্পটি চূড়ান্ত হবে– ‘ইস্ট-ওয়েস্ট’, ‘নর্দান করিডর’।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভারতকে কোনও ভাবেই পাকিস্তানের উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স এবং প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমন আল সাউদ, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েনকে সঙ্গে নিয়ে নতুন এই করিডরের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মধ্যপ্রাচ্যের মাধ্যমে ভারত ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগেই এই রেল-পোর্ট করিডর তৈরি করা হয়েছে। এই করিডরে থাকবে রেলপথ ও জলপথ। ভারত থেকে জলপথে সংযোগ স্থাপন করা হবে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে। এরপর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মধ্যে রেল যোগাযোগও গড়ে উঠবে। এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে মোদী বলেন– আমরা শুধু বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতেই আগ্রহী নই, আমরা বিশ্বাসের যোগসূত্রও বাড়াতে চাই! প্রসঙ্গত, গোটা সম্মেলনেই প্রধানমন্ত্রী বারবার এই ‘বিশ্বাসের ঘাটতি’র কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: কী খাওয়ানো হল জি২০-র বর্ণিল নৈশভোজে? চিনে নিন ‘মধুরিমা’ থেকে ‘বনবর্ণম’…
তবে পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ সম্প্রসারণের চেষ্টা ভারত যখনই করেছে, তখনই তাতে বাধ সেধেছে পাকিস্তান, চিন। পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তান বা পশ্চিম এশিয়ায় যোগসূত্র স্থাপনে ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে দ্বিধা করেছে তারা। তবে এবার এই দুই প্রতিবেশী-দেশের বাধা কাটিয়ে ভারত আত্মনির্ভর বাণিজ্যে তার পশ্চিম-অভিযান সফল করতে পারবে বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের পাল্টা হিসেবেই এই আর্থিক করিডর তৈরি করা হচ্ছে।