জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাবার ফোনে মেয়ের বিবস্ত্র ছবি পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল। লজ্জায় আত্মহত্যা করলেন মেয়ে। ঘটনাটি ঘটে, বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। আত্মঘাতী মহিলার নাম মুর্শেদা খানম মুন্নি। তিনি ২ সন্তানের মাও ছিলেন।
রবিবার নিহতের মহিলার বাবা মহম্মদ ইউনুছ সাতকানিয়া থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোহছেনের পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা আবদুর রহিম (৩৫), মহম্মদ ইলাফ (২০) ও আব্দুর করিম (৩৫)। এদের ছাড়াও আরও ২-৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত আবদুর রহিমের সঙ্গে মুন্নির বিয়ের ১০ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি বাড়িতে জানাজানি হলে মুন্নির বাড়িতে সম্পর্কে আপত্তি জানায়। তাঁকে অন্য একজনের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয়। কিন্তু সম্পর্কে থাকাকালীন মুন্নির কিছু স্পর্শকাতর ভিডিয়ো ও ছবি মোবাইলে রেখে দেয় রহিম। মুন্নির বিয়ের পর, সেই অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিয়ো বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করে রহিম। এমনকী টাকা আদায় করে সে।
আরও পড়ুন:Singapore Godwoman: মল খাইয়ে হাতিয়েছেন ৪৪ কোটি! কে এই ‘মহীয়সী’?
এইসব ছাড়াও সে মুন্নির স্বামীকে এই সব ছবি পাঠিয়ে তাদের সংসার ভেঙে দেওয়ারও ভয় দেখায়। ২০২১ সালে রহিমে সৌদি আরবে পাড়ি দেয়। সেখানে গিয়ে ইলাফের সহযোগিতায় মুন্নির ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। আবার ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করে। এমনকি সে মুন্নিকে ভিডিয়ো কলে বিবস্ত্র হতে বাধ্য করে। সেই বছরেই মুন্নি তাঁর বাবার বাড়িতে ঘুরতে আসে। সেখানে আসে রহিমের তুতো ভাই। সে মুন্নির ফোন থেকে মেমোরি কার্ড চুরি করে। সেখান থেকে মুন্নির স্বামীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ কিছু ছবি বিদেশে থাকা রহিমকে পাঠিয়ে দেয়। তারপর থেকে ব্ল্যাকমেইলের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।
প্রতিনিয়ত ব্ল্যাকমেইলে অতিষ্ঠ হয়ে মুন্নি যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তারপর রহিম মুন্নির বাবাকে সেই অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিয়ো পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। সেই কথা মুন্নি জানতে পারে। তাই বাবার সামনে লজ্জায় আর দাঁড়াতে পারবে না বলে চরম পদক্ষেপ নিয়ে ফেলে। সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন মুন্নি।
আরও পড়ুন:Suicide of Robot: ভরা অফিসে আত্মঘাতী রোবট, দানা বাঁধছে রহস্য
নিহত মুন্নির বাবা জানিয়েছেন, ‘রহিমের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কের কথা জানতে পারি। সেই জন্যেই ১০ বছর অন্যত্র বিয়ে দিই। তখন থেকেই সে আমার মেয়েকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছে। আমার মেয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাই সে বিদেশ থেকে মেয়ের বিবস্ত্র ছবি ও ভিডিয়ো আমাকে পাঠায়। এছাড়াও বিভিন্ন অশ্লীল কথাবার্তা এবং ছবি ও ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দিতে থাকে। এ ঘটনা আমার মেয়ে খাতায় এবং ডায়েরিতে লিখে গিয়েছে। আমার সামনে মুখ দেখাতে পারবে না বলে সে আত্মহত্য়ার পথ বেছে নিয়েছে। আমি এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার কামনা করছি।’
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রিটন সরকার বলেন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পুলিস।
আপনি কি অবসাদগ্রস্ত? বিষণ্ণ? চরম কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার হাত ধরতে তৈরি অনেকেই। কথা বলুন প্লিজ…
iCALL (সোম-শনি, ১০টা থেকে ৮টা) ৯১৫২৯৮৭৮২১
কলকাতা পুলিস হেল্পলাইন (সকাল ১০টা-রাত ১০টা, ৩৬৫ দিন) ৯০৮৮০৩০৩০৩, ০৩৩-৪০৪৪৭৪৩৭
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)