জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কদিন আগেই মণিপুর শান্ত হয়ে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। খুলেছিল স্কুল। যদিও প্রথম স্কুল খোলার দিনেই প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল যে, মণিপুরের অবস্থা মোটেই ভালো নেই। কেননা, সেদিনই স্কুলের বাইরে মারা গিয়েছিলেন এক মহিলা। তারপর কদিন মণিপুরে কোনও উত্তেজনার খবর শোনা যায়নি। কিন্তু ফের মণিপুর ফিরল মণিপুরেই।
আরও পড়ুন: 100 years of Gita Press: দেশের কোন প্রকাশনাকে মন্দিরের সঙ্গে তুলনা করলেন প্রধানমন্ত্রী?
গত ২৪ ঘন্টায় বিষ্ণুপুর ও চূড়াচন্দ্রপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় নতুন করে সংঘর্ষের বলি হলেন চার জন। এর মধ্যে এক পুলিসকর্মীও রয়েছে। রয়েছে এক কিশোর। গুলির লড়াইয়ে আহত আরও বেশ কয়েকজন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সকালে রাজ্য পুলিসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর ও চূড়াচন্দ্রপুরের সীমান্ত লাগোয়া খাংভাইয়ে প্রথমে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বন্দুকের লড়াই শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নিরাপত্তা রক্ষীরা। অতর্কিতে তাদের উপরই গুলি চালাতে থাকে জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দেয় নিরাপত্তা রক্ষীরাও। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে এক পুলিসকর্মী প্রাণ হারান। শনিবার সকালে ফের জঙ্গি হামলার শিকার হন আরও তিনজন। এর মধ্যে এক কিশোর রয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় জঙ্গিরা।
প্রাণহানি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে বিষ্ণুপুর ও চূড়াচন্দ্রপুরে। ওই এলাকায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের বলি হয়েছেন বহু মানুষ। তার মধ্যে খাংভাইয়ের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। শান্তি ফেরানোর জন্য মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ওই এলাকাকে বাফার জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনায় চার জনের প্রাণ যাওয়ায় ফের আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: Manipur: এখনও ফেরেনি শান্তি! স্কুলের বাইরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু মহিলার…
বহুদিন ধরে গোষ্ঠীহিংসায় জর্জরিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্য। এর মধ্যে চূড়াচাঁদপুরের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। দু’মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। হিংসা থামার কোনও লক্ষণই নেই। মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি এবং নাগা জনগোষ্ঠীর বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়াই মেইতেই সম্প্রদায়ের দাবি। মেইতেইরা মণিপুরের জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫৩ শতাংশ। এঁরা মূলত ইম্ফল উপত্যকাতেই থাকেন। নাগা আর কুকি’রা মণিপুরের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ শতাংশ। এঁরাও মণিপুরের পাহাড়ি উপত্যকা অঞ্চলে থাকেন। মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তর তালিকায় আনা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে কিছুদিন আগে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল মণিপুর হাইকোর্ট। এর পরেই নতুন করে উত্তপ্ত হয় এই রাজ্য। হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিবাদে চূড়াচাঁদপুর জেলার তোরবাঙে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর’ (এটিএসইউএম) ‘আদিবাসী সংহতি পদযাত্রা’র ডাক দিয়েছিল। সেখান থেকেই হিংসার সূত্রপাত হয়। সেই সূত্রপাত-মুহূর্ত থেকেই মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন এই হিংসার বলি হয়েছেন।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)