‘আমার কোল তো শূন্য, এবার বন্ধ করো দাঙ্গা’ ফ্রান্স জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে নাহেলের দিদার আকুল আবেদন… grandmother of seventeen-year-old who was shot dead by a police officer told calm down Paris is witnessing one of the worst social upheavals in decades

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ‘আমার মেয়ের মধ্যে জীবন বলতে আর কিছু বেঁচে নেই, ও শেষ হয়ে গিয়েছে। তোমরা এবার দাঙ্গা বন্ধ করো!’ অশ্রুবিজড়িত কণ্ঠে স্বদেশ-স্বজাতীয়দের প্রতি আকুল ও আন্তরিক আবেদন রাখলেন ফ্রান্সে পুলিসের গুলিতে নিহত কিশোর নাহেলের দিদা। টানা ছ’দিন ধরে বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স। পুলিশের গুলিতে ১৭ বছরের কিশোর নাহেল এম হত্যার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে এবার নাহেলের পরিবারের পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের কোনও রকম হিংস্রতায় না জড়ানোর আহ্বান জানানো হল। নাহেলের পরিবারের অবশ্য দাবি, ফরাসি পুলিসের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নীতি এবার বদলাতে হবে।

আরও পড়ুন: সন্তানের জন্ম দিলেই কোম্পানি মোটা টাকা বোনাস দেবে আপনাকে…

নাহেলের এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেছে আন্তর্জাতিক এক সংবাদসংস্থা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেছেন, হতে পারে তাঁদের ঘরের ছেলে মারা গিয়েছে, কিন্তু সেই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে পুরো ফ্রান্সে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ুক, সেটা মোটেই চান না তাঁরা। তবে রাস্তায় চেকিং পোস্টগুলিতে যেভাবে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেই নীতিতে এবার পরিবর্তন আনা জরুরি। নাহেলের দিদা গতকাল রবিবার দাঙ্গা বন্ধ করতে ও সবাইকে শান্ত হতে আহ্বান জানিয়েছেন।

দেশীয় এক টেলিভিশনকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাহেলের দিদা বলেন– ‘থামো, দাঙ্গা কোরো না।’ তিনি দাঙ্গাকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘ভাঙচুর কোরো না। স্কুলে ও বাসে হামলা চালিও না। বাসের যাত্রীদের মধ্যে অনেক মা রয়েছেন। বাইরে যাঁরা হাঁটছেন, তাঁদের মধ্যেও অনেক মা আছেন।’ নাহেলের দিদা নাদিয়া আরও বলেন, ‘আমি ক্লান্ত। নাহেল মারা গিয়েছে। আমার মেয়ে একমাত্র সন্তানকে হারিয়েছে। আমার মেয়ের আর কোনও জীবন নেই!’

ফ্রান্সে এই বিক্ষোভের শুরু মঙ্গলবার। ওই দিন প্যারিসের শহরতলির নতেঁর একটি চেকিং পোস্টে নাহেলকে গুলি করে হত্যা করেন এক পুলিস কর্মকর্তা। এরপর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা হিংস্রতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভ দমাতে ও লুটপাট বন্ধ করতে ফ্রান্স জুড়ে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়।

এই পরিস্থিতিতে নাহেলের এক স্বজন বলেন, আমরা কখনোই কাউকে ঘৃণা ছড়াতে বা দাঙ্গায় অংশ নিতে বলিনি। ভাঙচুর কিংবা লুটপাট চালাতেও বলিনি। এখন যা চলছে, সেটা নাহেলের জন্য নয়। নাহেলের স্মরণে রাজপথে শান্তিপূর্ণ  মিছিল করা হয়েছে। নাহেলের ওই আত্মীয় অবশ্য পাশাপাশি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, চেকপোস্টগুলিতে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে ফরাসি কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

আরও পড়ুন: The Netherlands: ১৬০ বছর আগেকার ঘটনার সূত্রে ক্ষমা চাইলেন ডাচ রাজা…

নাহেলের বেড়ে ওঠা প্যারিসের পশ্চিমে নতেঁ শহরের পাবলো পিকাসো নামের এস্টেটে। এস্টেটটি অভিবাসীবহুল। একমাত্র সন্তান নাহেলকে বড় করেছেন তার মা। নাহেল পণ্য ডেলিভারির কাজ করত। তার বাবার পরিচয় জানা যায়নি। নাহেলের মা আলজেরিয়ার বংশোদ্ভূত মোনিয়া। তিনি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি শুধু একজনকেই দোষারোপ করি, যিনি আমার ছেলের জীবন নিয়েছেন।’

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

Source link