জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কোন পথে বাংলাদেশ? দেশের সংবিধান থেকে এবার বেশ কিছু বিষয় বাদ দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিলেন খোদ অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান। যেমন, সমাজতন্ত্র, জাতির পিতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা!
আরও পড়ুন: Bangladesh: অশান্ত বাংলাদেশে নজরুলগীতির আসর! কবির শ্যামাসংগীতেই সম্প্রীতির বার্তা পদ্মাপারে…
ঘটনাটি ঠিক কী? বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী রুল জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ, বুধবার সেই সংক্রান্ত মামলাটি শুনানি হয় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে এটা না যে হাজার হাজার মানুষকে গুম করা হবে, ৬০ লাখের বেশি মানুষকে গায়েবি মামলায় আসামি করা হবে, বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হবে। যাদের হাত নেই, এ রকম মানুষকে আসামি করে বলা হয়েছে, তারা বোমা মেরেছেন। হজে থাকা ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এসব হতে পারে না’।
আসাদুজ্জামানের মতে, ‘সংবিধানের ৭খ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। সংবিধানের মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র না। আমরা সমাজতন্ত্র বাদ চাইছি। শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে কেউ অস্বীকার করে না। জাতির পিতা নিয়ে সিরিয়াস বিতর্ক আছে’। তাঁর দাবি, ‘জাতি বিভক্ত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৈরি করা সংবিধানে জাতির পিতা ছিল না। এটি পঞ্চদশ সংশোধনীতে ঢোকানো হয়েছে। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন করা হয়েছে-তার (শেখ মুজিব) বিরুদ্ধে কথা বললেই রাষ্ট্রদ্রোহ হবে। তাকে জাতির পিতা বলা সংবিধানের স্পিরিটের পরিপন্থী’।
সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ বাতিলের আর্জি জানিয়েছেন অ্যার্টনি জেনারেল। তিনি বলেন, ‘এটার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা হয়েছে। পৃথিবীর কোনও দেশে ভাষা দিয়ে জাতিসত্তা নির্ধারণ করা হয় না। ৭ক ও ৭খ অনুচ্ছেদ? দেশের সর্বোচ্চ আইনি কর্মকর্তা বলছেন, ‘এটা গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার জন্য, গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য করা হয়েছে। অসৎ উদ্দেশ্যে স্বৈরশাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য করা হয়েছে। এটি আইনের শাসনের পরিপন্থী’।
বাংলাদেশের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অ্যার্টনি জেনারেল। আদালতে তাঁর সওয়াল, ‘এই দেশের ৯০ ভাগ মুসলমান। আগে আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ছিল। এটা যেভাবে আগে ছিল সেভাবে চাইছি। আর ২ ক-তেই বলা আছে, রাষ্ট্র সকল ধর্ম পালনে সমান অধিকার ও সমমর্যাদা নিশ্চিত করবে। অনুচ্ছেদ ৯-এ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’-এর কথা বলা হয়েছে। এটি সাংঘর্ষিক’।
অ্যাটর্নি জেনারেলের আরও বক্তব্য, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে, মৌলিক অধিকার ধ্বংস করা হয়েছে। কেন পঞ্চদশ সংশোধনী অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না? এটা সংবিধানের অংশ হিসেবে রাখা যাবে না। পঞ্চদশ সংশোধনী রাখা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থান ও ’২৪ এর জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল না হলে আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে না’।
আরও পড়ুন: Hero Alom: ‘ফারুকী উপদেষ্টা হলে, আমার কী দোষ?’, প্রশ্ন হিরো আলমের…
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)